Wednesday, 7 November 2018

#ঢাকা

ঢাকা আর চট্টগ্রাম মানুষের মধ্যে বড় একটা তফাৎ আছে। বাংলাদেশের এই দুই শহরের মানুষের মন মানসিকতা একদম ভিন্ন।

ঢাকাতে বিয়ে নয়ত জন্মদিনেরর মত কোন অনুষ্ঠানে গেলে ভালো একটা সালামি দিয়ে আপনাকে খেয়ে আসতে হবে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এইসব বড় অনুষ্ঠান যারা সালামি দিয়ে খেতে পারবে তাদেরকেই নিমন্ত্রণ করা হয়। আবার যাদের নিমন্ত্রণ করা হয় তারাও অনেকটা চালাক প্রজাতির। সালামি যাই দিক, চেষ্টা করবে পুরো পরিবার খেয়ে তা উশুল করে নিয়ে আসতে। পরিবারে লোকজন কম হলে বাহির থেকে কোন খাদক টাইপের বন্ধু কে সাথে নিয়ে যাবে। যাওয়ার আগে বলবে, কিরে সালামি যা দিবো তা খেয়ে আসতে পারবিত! বন্ধু জোর গলায় বলে, পারবোনা মানে! এমন খাওন দিমু এই সরকার থাকাকালীন আর পেটে ক্ষুধা আইবনা।

ঢাকায় নদীর ওপারে যে সব ছোট পরিবার ভাড়া থাকে তারাও ছেলে মেয়েদের নাম রাখা থেকে শুরু করে জন্মদিন কান ফোঁড়া নাক ফোঁড়া সব কিছুতে অনুষ্ঠান করে। এইসব অনুষ্ঠান অনেকটা ব্যবসার মত। চল্লিশ হাজার টাকা খর্চা করলে সালামি আসে পঞ্চাশ হাজার পাঁচপঞ্চাশ হাজার টাকা। মানে দশ থেকে পনেরো হাজার টাকা লাভ।

চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে এই মানসিকতা নেই বললেই চলে। থাকলেও খুব কম সংখ্যক হবে। চট্টগ্রামে যদি কোন ধনী ব্যক্তি মারা যায় তাহলে দুই থেকে তিন দিন ওই বাড়িতে আনলিমিটেড খানা চলতে থাকে। দিনে আপনি কতবার খাবেন তার উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বিয়ের অনুষ্ঠানেও এরা গরীব মিসকিনদের জন্য আলাদা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে।

গত কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের একজন লোকের গাড়িতে বসি। তিনি বাড়িতে মোবাইলে কথা বলছিলেন। সম্ভবত তার ভাই নয়ত অন্য কারো বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। তিনি বার বার সাবধান করে বলছিলেন, যেন একটা গরীবও বাড়ি থেকে না খেয়ে যায়। পয়সাওয়ালারা সবসময় ভালমন্দ খেতে পারে। কিন্তু গরীবরা সেটা পারেনা। তাই তিনি বার বার বলছিলেন গরীবদের যেন ঠিকমত খাওয়ায়।

মধ্যপ্রাচ্য আরব আমিরাতে প্রায় বাংলাদেশের অনেক জেলার মানুষ আছে। কিন্তু অদ্ভুত সত্য হচ্ছে, বারই রবিউল আওয়াল আসলে একমাত্র চট্টগ্রামের মানুষরাই মেজবানের আয়োজন করে থাকে। যদিও বারই রবিউল আওয়ালে এইসব খাওয়াদাওয়ার পক্ষে আমি না। তবু এটা ভেবে ভাল লাগেযে, একটা দিনের  উছিলায় অনেক মানুষ এক সাথে খেতে পারে। আমি যেখানে থাকি সেখানেও এমন একটা খানার আয়োজন হয়। যেখানে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা খর্চা করে থাকে। রাত আট টা থেকে রাত বারটা পর্যন্ত চলে খানা। এই সময়ের মধ্যে আপনি তিনবার খেয়ে আসলেও কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করবেনা কেন আপনি এতবার খেতে আসছেন।

#বিঃ_দ্রঃ আমি কিন্তু ঢাকাইয়াও না চাটগাঁইয়াও না। যা বলেছি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং নিরপেক্ষতা থেকে বলেছি।😊

লেখা: Mohammad Farookh

No comments:

Post a Comment

সবুজ বাতি

আমার এক বান্ধবী ছিল, ফরেনার বান্ধবী তার দেশ ছিল মেক্সিকো! হঠাত করেই পরিচয় অনেক কথা!! তার নাম ছিল জেরিন। অবশ্য এই নামে শুধু আমিই ডাকতাম ক...